বর্তমানে আমাদের দেশে ভুয়া লিংকে ক্লিক করে আইডি হারানো এবং পরবর্তীতে হয়রানির শিকার হওয়ার এমন অভিযোগ দিন দিন বেড়েই চলেছে। আকর্ষণীয় খবরের লিংক...
বর্তমানে আমাদের দেশে ভুয়া লিংকে ক্লিক করে আইডি হারানো এবং পরবর্তীতে হয়রানির শিকার হওয়ার এমন অভিযোগ দিন দিন বেড়েই চলেছে। আকর্ষণীয় খবরের লিংক, প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হওয়ার জন্য ভোট চেয়ে অনুরোধ, আপনার চেহারা দেখতে কোন তারকার মত বা কার সাথে বিয়ে হবে এমন উদ্ভট জরিপ, অনলাইনে বায়োমেট্রিক সিম নিবন্ধন এর সুযোগসহ বিভিন্ন প্রলোভনে পড়ে অনেকেই ফেসবুক আইডি হারাচ্ছেন। দেশে প্রচলিত এই সাইবার ক্রাইমটিকে ফিশিং বলে।
একটু অসতর্কতার কারণে ফিশিংয়ের শিকার হয়ে ভয়ানক বিপদে পড়ছে ফেসবুক ব্যবহারকারী। ফেসবুক আইডির দখল নিয়ে হ্যাকাররা ব্যক্তিগত ছবি কিংবা চ্যাট প্রকাশ করার ভয় দেখিয়ে ভূক্তভোগির কাছ থেকে টাকা আদায়ের পাশাপাশি অনৈতিক সম্পর্ক গড়ার প্রস্তাব দিচ্ছে। মান সম্মান হারানোর ভয়ে এবং পরিত্রাণের আশায় অনেকেই আবার এমন সব কুপ্রস্তাবে রাজি হতে বাধ্য হচ্ছেন।
এমন হ্যাকিং বা ব্লাক মেইলিংয়ের শিকার হলে করণীয় পদক্ষেপ গুলো সম্পর্কে সঠিক ধারণা না থাকায় এবং প্রচলিত আইনে ভিকটিমের জন্য কি কি সুরক্ষার ব্যবস্থা রাখা আছে তা জানা না থাকায়। হ্যাকারের নিকট অসহায় ভাবে আত্মসমর্পণ করে বসে অধিকাংশ ভূক্তভোগি। কিন্তু এভাবে আত্মসমর্পণ করলেও বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়না বরং উপরন্তু হ্যাকারকে আরও বেশি আত্মবিশ্বাসী করবে নতুন নতুন অনৈতিক দাবি করতে। মনে রাখা জরুরি, সামান্য অসুখ নীরবে সহ্য করে ক্যান্সার বাঁধানোর কোনো মানে হয়না।
সম্প্রতি দেশের ৪০টি স্কুল ও কলেজের ১০ হাজার জন ছাত্রীকে সাইবার অপরাধ প্রতিরোধ বিষয়ক একটি প্রশিক্ষণ দিয়েছে সরকার। ৮ম থেকে একাদশ শ্রেণীর অল্প বয়সি মেয়েরা এই প্রশিক্ষণ কর্মশালায় সাইবার অপরাধের শিকার হলে তা থেকে পরিত্রাণের উপায়, বিপদে পড়লে কোথায় জানাতে হবে ও আইনে কি কি সুরক্ষার কথা বলা আছে তা জেনেছে। বিবিসি, ভয়েস অব অ্যামেরিকার ও দ্যা গার্ডিয়ানের মত বিশ্বের প্রভাবশালী গণমাধ্যম গুলো সরকারের এই উদ্যোগকে প্রশংসা করেছে।
এই কর্মশালায় অংশ নেয়া ১০ হাজার ২০০ জন শিক্ষার্থীর উপর একটি জরিপও করেছে বাংলাদেশ সরকারের তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ। ঐ জরিপ এর ফলাফলে উঠে এসেছে উদ্বেগজনক চিত্র। যেমন- কর্মশালার ৯৩ শতাংশ ছাত্রীই জানেনা যে দেশে এই সংক্রান্ত একটি আইন আছে।
জরিপের ফলাফলে আরও বলা হয়, কর্মশালায় অংশ নেয়া শিক্ষার্ধীদের মধ্যে ৬৯ শতাংশ ইন্টারনেট সেবা গ্রহণ করে। ঐ ৬৯ শতাংশ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৮৩ শতাংশই সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম যেমন- ফেইসবুক, ইমো, ভাইবার, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াট’স অ্যাপ ইত্যাদি ব্যবহার করে। তবে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় ফেসবুক, যা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ব্যবহারকারীর মোট ৯৪ শতাংশ।
আইনে কি কি সুরক্ষার ব্যবস্থা আছে :
প্রথমেই জেনে নেওয়া যাক এই রকম ঘটনায় বিদ্যমান আইন আপনার জন্য কী কী সুরক্ষার ব্যবস্থা রেখেছে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন ২০০৬ (সংশোধিত – ২০১৩) এর ৫৬ ধারায় বলা আছে, যদি কোনব্যক্তি কম্পিউটার, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক, সার্ভার কিংবা অন্যকোন ইলেষ্ট্রনিক সিস্টেমে অবৈধ ভাবে প্রবেশ করার মাধ্যমে ইহার ক্ষতি সাধন করে, যার মালিক তিনি বা দখলকার নহে, তাহালে তাহার এই কার্য হইবে একটি হ্যাকিং অপরাধ। শাস্তির বিধানে বলা হয়েছে, কোনব্যক্তি হ্যাকিং অপরাধ করলে তার অনধিক চৌদ্দ বছর এবং অনূন্য সাত বছরের কারাদণ্ডে বা অনধিক এক কোটি টাকা অর্থদণ্ডে কিংবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবে।
একই আইনের ৫৭ ধারায় বলা আছে (১) যদি কোনব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে ওয়েবসাইটে বা অন্যকোন ইলেষ্ট্রনিক বিন্যাসে এমন কিছু প্রকাশ বা সম্প্রচার করে, যা মিথ্যা ও অশ্লীল কিংবা সংশ্লিষ্ট অবস্থা বিবেচনায় কেহ পড়লে, দেখলে বা শুনলে নীতিভ্রষ্ট বা অসৎ হইতে উদ্বুদ্ধ হতে পারে অথবা যাহার মাধ্যমে মানহানি ঘটে, আইন শৃঙ্খলার অবনতি ঘটে বা ঘটার সম্ভাবনা তৈরি হয়, রাষ্ট্র ও ব্যক্তির ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয় বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে বা করতে পারে বা এই ধরনের তথ্যাদির মাধ্যমে কোনব্যক্তি বা সংগঠনের বিরুদ্ধে উস্কানি প্রদান করা হয়, তাহলে তার এই কার্য হবে একটি অপরাধ।
শাস্তির বিধানে বলা আছে, কোনব্যক্তি উপ-ধারা (১) এর অধীন অপরাধ করিলে অনধিক চৌদ্দ বছর এবং অনূন্য সাত বছর কারাদণ্ডে বা অনধিক এক কোটি টাকা অর্থদণ্ডে বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবে।
সাইবার অপরাধের শিকার হলে কি করবেন :
আইনে অপরাধের ধরণ এবং অপরাধীর শাস্তির বিধান এর কথা বলা আছে। কিন্তু প্রতিকার পেতে গেলে আপনাকে এই আইনটি ব্যবহার করতে হবে কিংবা আইনের আশ্রয় নিতে হবে। আসুন তাহলে জেনে নিই প্রতিকার পেতে হলে কি করতে হবে। এমন ঘটনায় ফেসবুক আইডি উদ্ধারে ব্যর্থ হলে ভুক্তভোগিকে যা যা করতে হবে তা হল-
ক) ঘটনার বিবরণ, বিকাশ কিংবা রকেটের যে নাম্বার পাঠিয়ে টাকা দাবি করেছে তা উল্লেখ করে নিকটবর্তী থানায় জিডি করতে হবে।
খ) থানার পুলিশ যদি পূর্ণ সহযোগিতা না করে কিংবা ব্যর্থ হয় তবে জিডির কপি নিয়ে পুলিশের হেড কোয়ার্টারে অবস্থিত সাইবার ক্রাইম ইউনিটের সাথে যোগাযোগ করা যেতে পারে। এছাড়াও দেশের যেকোন প্রান্ত থেকে পুলিশের হ্যালো সিটি অ্যাপের মাধ্যমে অভিযোগ দাখিল করলে প্রতিকার মিলবে।
ঘ) অভিযোগ দাখিল করার পর কয়েকদিন অপেক্ষা করতে হবে এবং নিয়মিত ফলোআপ করতে হবে। তাহলে আপনি প্রতিকার পাবেন। কেননা সাইবার ক্রাইম ইউনিটের আছে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি ও দক্ষ কর্মকর্তা রয়েছে।
অনলাইনে সতর্ক থাকুন :
বিপদে পড়ে সাহায্য চাওয়ার চেয়ে আগাম সতর্কতা সাইবার অপরাধের শিকার হওয়ার ঝুঁকি কমায়। যেসব বিষয়ে খেয়াল রাখলে কিংবা পদক্ষেপ নিলে এমন বিপদ থেকে সুরক্ষিত থাকা যায় তার কয়েকটি বিষয় পাঠকের জন্য তুলে ধরছি।
১) ইমেইল এবং ফেসবুক আইডির পাসওয়ার্ড ভিন্ন রকম রাখুন। কারণ হ্যাকাররা ফেসবুক আইডি হ্যাক করার পর ইমেইল অ্যাড্রেসও বদলে ফেলে। আর ইমেইল বদলে ফেলতে পারলে হ্যাকড হওয়া একাউন্ট ফিরে পাওয়া কঠিন।
২) কোথাও পাসওয়ার্ড দেওয়ার প্রয়োজন হলে লক্ষ করে দেখুন এটি আসলেই মূল ঠিকানার অ্যাড্রেস কিনা। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ভুয়া সাইট গুলোতে পাসওয়ার্ড দিয়েই বিপদে পড়ে মানুষ। যেমন ধরুন- facebook.com এর পরিবর্তে যদি facabook.com, facebookie.com ইত্যাদি দেখায় তাহলে পুনরায় পাসওয়ার্ড টাইপ করা থেকে বিরত থাকুন।
৩) কাজ শেষ হলে অবশ্যই লগ আউট করতে হবে। এক্ষেত্রে পাসওয়ার্ড রিমেম্বার দেওয়া যাবেনা। পাবলিক কম্পিউটারে বসলে অবশ্যই কাজ শেষে cache ও cookies ডিলেট করতে হবে।
৪) Facebook password reset confirmation এই রকম লিংকে ঢুকে পাসওয়ার্ড রিসেট ক্লিক করা থেকে বিরত থাকুন।
৫) ফিশিং বা অন্যকোন উপায়ে পাসওয়ার্ড চুরির ক্ষেত্রে আইডির ক্ষতি ঠেকাতে আপনার ফেসবুক একাউন্টে মোবাইল নাম্বার দিয়ে রাখুন। এরপর Account Settings এর Security অপশনে গিয়ে Change অপশনে ক্লিক করুন। Login Notifications এর নিচে লেখা Send me a text message নির্বাচন করুন। এতে করে আপনার ব্যবহৃত ডিভাইস ছাড়া অন্যকোন ডিভাইস থেকে লগইন করা হলে আপনার মোবাইলে বার্তা যাবে। এরপর Login Approvals এর নিচে লেখা Require me to enter a security code sent to my phone নির্বাচন করুন। এতে কেউ আপনার একাউন্টে লগইন করার চেষ্টা করলে মোবাইলে একটি কোড পাঠাবে ফেসবুক। কোড ছাড়া কোন ভাবেই লগইন করা সম্ভব হবেনা।
আশা করি আমার ব্লগটি আপনার কাছে একটু উপকারী মনে হয়েছে। আপনি এই ব্লগটি শেয়ার করে আপনার কাছের মানুষকে সচেতন করে তুলুন।
একটু অসতর্কতার কারণে ফিশিংয়ের শিকার হয়ে ভয়ানক বিপদে পড়ছে ফেসবুক ব্যবহারকারী। ফেসবুক আইডির দখল নিয়ে হ্যাকাররা ব্যক্তিগত ছবি কিংবা চ্যাট প্রকাশ করার ভয় দেখিয়ে ভূক্তভোগির কাছ থেকে টাকা আদায়ের পাশাপাশি অনৈতিক সম্পর্ক গড়ার প্রস্তাব দিচ্ছে। মান সম্মান হারানোর ভয়ে এবং পরিত্রাণের আশায় অনেকেই আবার এমন সব কুপ্রস্তাবে রাজি হতে বাধ্য হচ্ছেন।
এমন হ্যাকিং বা ব্লাক মেইলিংয়ের শিকার হলে করণীয় পদক্ষেপ গুলো সম্পর্কে সঠিক ধারণা না থাকায় এবং প্রচলিত আইনে ভিকটিমের জন্য কি কি সুরক্ষার ব্যবস্থা রাখা আছে তা জানা না থাকায়। হ্যাকারের নিকট অসহায় ভাবে আত্মসমর্পণ করে বসে অধিকাংশ ভূক্তভোগি। কিন্তু এভাবে আত্মসমর্পণ করলেও বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়না বরং উপরন্তু হ্যাকারকে আরও বেশি আত্মবিশ্বাসী করবে নতুন নতুন অনৈতিক দাবি করতে। মনে রাখা জরুরি, সামান্য অসুখ নীরবে সহ্য করে ক্যান্সার বাঁধানোর কোনো মানে হয়না।
সম্প্রতি দেশের ৪০টি স্কুল ও কলেজের ১০ হাজার জন ছাত্রীকে সাইবার অপরাধ প্রতিরোধ বিষয়ক একটি প্রশিক্ষণ দিয়েছে সরকার। ৮ম থেকে একাদশ শ্রেণীর অল্প বয়সি মেয়েরা এই প্রশিক্ষণ কর্মশালায় সাইবার অপরাধের শিকার হলে তা থেকে পরিত্রাণের উপায়, বিপদে পড়লে কোথায় জানাতে হবে ও আইনে কি কি সুরক্ষার কথা বলা আছে তা জেনেছে। বিবিসি, ভয়েস অব অ্যামেরিকার ও দ্যা গার্ডিয়ানের মত বিশ্বের প্রভাবশালী গণমাধ্যম গুলো সরকারের এই উদ্যোগকে প্রশংসা করেছে।
এই কর্মশালায় অংশ নেয়া ১০ হাজার ২০০ জন শিক্ষার্থীর উপর একটি জরিপও করেছে বাংলাদেশ সরকারের তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ। ঐ জরিপ এর ফলাফলে উঠে এসেছে উদ্বেগজনক চিত্র। যেমন- কর্মশালার ৯৩ শতাংশ ছাত্রীই জানেনা যে দেশে এই সংক্রান্ত একটি আইন আছে।
জরিপের ফলাফলে আরও বলা হয়, কর্মশালায় অংশ নেয়া শিক্ষার্ধীদের মধ্যে ৬৯ শতাংশ ইন্টারনেট সেবা গ্রহণ করে। ঐ ৬৯ শতাংশ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৮৩ শতাংশই সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম যেমন- ফেইসবুক, ইমো, ভাইবার, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াট’স অ্যাপ ইত্যাদি ব্যবহার করে। তবে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় ফেসবুক, যা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ব্যবহারকারীর মোট ৯৪ শতাংশ।
আইনে কি কি সুরক্ষার ব্যবস্থা আছে :
প্রথমেই জেনে নেওয়া যাক এই রকম ঘটনায় বিদ্যমান আইন আপনার জন্য কী কী সুরক্ষার ব্যবস্থা রেখেছে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন ২০০৬ (সংশোধিত – ২০১৩) এর ৫৬ ধারায় বলা আছে, যদি কোনব্যক্তি কম্পিউটার, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক, সার্ভার কিংবা অন্যকোন ইলেষ্ট্রনিক সিস্টেমে অবৈধ ভাবে প্রবেশ করার মাধ্যমে ইহার ক্ষতি সাধন করে, যার মালিক তিনি বা দখলকার নহে, তাহালে তাহার এই কার্য হইবে একটি হ্যাকিং অপরাধ। শাস্তির বিধানে বলা হয়েছে, কোনব্যক্তি হ্যাকিং অপরাধ করলে তার অনধিক চৌদ্দ বছর এবং অনূন্য সাত বছরের কারাদণ্ডে বা অনধিক এক কোটি টাকা অর্থদণ্ডে কিংবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবে।
একই আইনের ৫৭ ধারায় বলা আছে (১) যদি কোনব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে ওয়েবসাইটে বা অন্যকোন ইলেষ্ট্রনিক বিন্যাসে এমন কিছু প্রকাশ বা সম্প্রচার করে, যা মিথ্যা ও অশ্লীল কিংবা সংশ্লিষ্ট অবস্থা বিবেচনায় কেহ পড়লে, দেখলে বা শুনলে নীতিভ্রষ্ট বা অসৎ হইতে উদ্বুদ্ধ হতে পারে অথবা যাহার মাধ্যমে মানহানি ঘটে, আইন শৃঙ্খলার অবনতি ঘটে বা ঘটার সম্ভাবনা তৈরি হয়, রাষ্ট্র ও ব্যক্তির ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয় বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে বা করতে পারে বা এই ধরনের তথ্যাদির মাধ্যমে কোনব্যক্তি বা সংগঠনের বিরুদ্ধে উস্কানি প্রদান করা হয়, তাহলে তার এই কার্য হবে একটি অপরাধ।
শাস্তির বিধানে বলা আছে, কোনব্যক্তি উপ-ধারা (১) এর অধীন অপরাধ করিলে অনধিক চৌদ্দ বছর এবং অনূন্য সাত বছর কারাদণ্ডে বা অনধিক এক কোটি টাকা অর্থদণ্ডে বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবে।
সাইবার অপরাধের শিকার হলে কি করবেন :
আইনে অপরাধের ধরণ এবং অপরাধীর শাস্তির বিধান এর কথা বলা আছে। কিন্তু প্রতিকার পেতে গেলে আপনাকে এই আইনটি ব্যবহার করতে হবে কিংবা আইনের আশ্রয় নিতে হবে। আসুন তাহলে জেনে নিই প্রতিকার পেতে হলে কি করতে হবে। এমন ঘটনায় ফেসবুক আইডি উদ্ধারে ব্যর্থ হলে ভুক্তভোগিকে যা যা করতে হবে তা হল-
ক) ঘটনার বিবরণ, বিকাশ কিংবা রকেটের যে নাম্বার পাঠিয়ে টাকা দাবি করেছে তা উল্লেখ করে নিকটবর্তী থানায় জিডি করতে হবে।
খ) থানার পুলিশ যদি পূর্ণ সহযোগিতা না করে কিংবা ব্যর্থ হয় তবে জিডির কপি নিয়ে পুলিশের হেড কোয়ার্টারে অবস্থিত সাইবার ক্রাইম ইউনিটের সাথে যোগাযোগ করা যেতে পারে। এছাড়াও দেশের যেকোন প্রান্ত থেকে পুলিশের হ্যালো সিটি অ্যাপের মাধ্যমে অভিযোগ দাখিল করলে প্রতিকার মিলবে।
ঘ) অভিযোগ দাখিল করার পর কয়েকদিন অপেক্ষা করতে হবে এবং নিয়মিত ফলোআপ করতে হবে। তাহলে আপনি প্রতিকার পাবেন। কেননা সাইবার ক্রাইম ইউনিটের আছে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি ও দক্ষ কর্মকর্তা রয়েছে।
অনলাইনে সতর্ক থাকুন :
বিপদে পড়ে সাহায্য চাওয়ার চেয়ে আগাম সতর্কতা সাইবার অপরাধের শিকার হওয়ার ঝুঁকি কমায়। যেসব বিষয়ে খেয়াল রাখলে কিংবা পদক্ষেপ নিলে এমন বিপদ থেকে সুরক্ষিত থাকা যায় তার কয়েকটি বিষয় পাঠকের জন্য তুলে ধরছি।
১) ইমেইল এবং ফেসবুক আইডির পাসওয়ার্ড ভিন্ন রকম রাখুন। কারণ হ্যাকাররা ফেসবুক আইডি হ্যাক করার পর ইমেইল অ্যাড্রেসও বদলে ফেলে। আর ইমেইল বদলে ফেলতে পারলে হ্যাকড হওয়া একাউন্ট ফিরে পাওয়া কঠিন।
২) কোথাও পাসওয়ার্ড দেওয়ার প্রয়োজন হলে লক্ষ করে দেখুন এটি আসলেই মূল ঠিকানার অ্যাড্রেস কিনা। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ভুয়া সাইট গুলোতে পাসওয়ার্ড দিয়েই বিপদে পড়ে মানুষ। যেমন ধরুন- facebook.com এর পরিবর্তে যদি facabook.com, facebookie.com ইত্যাদি দেখায় তাহলে পুনরায় পাসওয়ার্ড টাইপ করা থেকে বিরত থাকুন।
৩) কাজ শেষ হলে অবশ্যই লগ আউট করতে হবে। এক্ষেত্রে পাসওয়ার্ড রিমেম্বার দেওয়া যাবেনা। পাবলিক কম্পিউটারে বসলে অবশ্যই কাজ শেষে cache ও cookies ডিলেট করতে হবে।
৪) Facebook password reset confirmation এই রকম লিংকে ঢুকে পাসওয়ার্ড রিসেট ক্লিক করা থেকে বিরত থাকুন।
৫) ফিশিং বা অন্যকোন উপায়ে পাসওয়ার্ড চুরির ক্ষেত্রে আইডির ক্ষতি ঠেকাতে আপনার ফেসবুক একাউন্টে মোবাইল নাম্বার দিয়ে রাখুন। এরপর Account Settings এর Security অপশনে গিয়ে Change অপশনে ক্লিক করুন। Login Notifications এর নিচে লেখা Send me a text message নির্বাচন করুন। এতে করে আপনার ব্যবহৃত ডিভাইস ছাড়া অন্যকোন ডিভাইস থেকে লগইন করা হলে আপনার মোবাইলে বার্তা যাবে। এরপর Login Approvals এর নিচে লেখা Require me to enter a security code sent to my phone নির্বাচন করুন। এতে কেউ আপনার একাউন্টে লগইন করার চেষ্টা করলে মোবাইলে একটি কোড পাঠাবে ফেসবুক। কোড ছাড়া কোন ভাবেই লগইন করা সম্ভব হবেনা।
আশা করি আমার ব্লগটি আপনার কাছে একটু উপকারী মনে হয়েছে। আপনি এই ব্লগটি শেয়ার করে আপনার কাছের মানুষকে সচেতন করে তুলুন।