* ৩, ৪ ও ৫ জানুয়ারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা * বৃষ্টিপাতের পর তাপমাত্রা নামতে শুরু করবে * গ্রামাঞ্চলে শীতের তীব্রতা বেশি অনুভূত হবে ...
* ৩, ৪ ও ৫ জানুয়ারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা
* বৃষ্টিপাতের পর তাপমাত্রা নামতে শুরু করবে
* গ্রামাঞ্চলে শীতের তীব্রতা বেশি অনুভূত হবে
চলতি জানুয়ারি মাসে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আরও দুটি তীব্র এবং একটি মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক সামছুদ্দিন আহমেদ।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে শৈত্যপ্রবাহ ও সরকারের প্রস্তুতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক এ তথ্য জানান। এ সময় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান ও সিনিয়র সচিব মো. শাহ কামাল উপস্থিত ছিলেন।
সামছুদ্দিন আহমদে বলেন, ‘আবহাওয়া অধিদফতরের পূর্বাভাস রয়েছে, বছরের প্রথম মাসের প্রথমার্ধেই দেশের অনেক স্থানে বৃষ্টিপাত হবে। গতকাল ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগ ছাড়া দেশের সব স্থানেই হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আগামীকাল (শুক্রবার) এ বৃষ্টিপাত আরও বাড়বে।’
আগামী ৬ জানুয়ারি থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ও রাতের তাপমাত্রা আরও কমে যাবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘জানুয়ারি মাসে আরও দুটি তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। এছাড়া একটি মাঝারি শৈত্যপ্রবাহও বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।’
আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক বলেন, ‘এসব শৈত্যপ্রবাহ চলাকালীন বিভিন্ন বিভাগের জেলাগুলোতে কনকনে শীত অনুভূত হবে। আগামী ৩, ৪ ও ৫ জানুয়ারি বৃষ্টিপাত হবে। বৃষ্টিপাত হওয়ার পর তাপমাত্রা ধীরে ধীরে দেশের বিভিন্ন স্থানে নামতে শুরু করবে এবং শৈত্যপ্রবাহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিরাজমান থাকবে। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে শীতের তীব্রতাটা বেশি অনুভূত হবে।’
তিনি বলেন, ‘রাতের তাপমাত্র বা সর্বনিম্ন তাপমাত্রা যদি ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে গেলে তাকে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বলে। আর ৬ থেকে ৮ ডিগ্রির মধ্যে থাকলে হবে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ, ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে হবে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ।’
শৈত্যপ্রবাহগুলো কখন কখন আসবে- জানতে চাইলে পরিচালক বলেন, ‘৬ তারিখের পর এ শৈত্যপ্রবাহগুলো শুরু হবে। জানুয়ারির শেষ সপ্তাহের দিকে একটি তীব্র শৈত্যপ্রবাহ হতে পারে, মাঝামাঝি সময়ে একটি মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ হতে পারে।’
‘রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ বিভাগ, ঢাকা বিভাগের কিছু অংশ, সিলেট ও সুনামগঞ্জ অঞ্চলে শীতের তীব্রতাটা বেশি থাকবে। পাশাপাশি পার্বত্য চট্টগ্রামের আরেকটি অঞ্চল বাঘাইছড়ি ও এর আশপাশের এলাকায় শীতের তীব্রতা থাকবে। ঢাকা থেকে দক্ষিণাঞ্চলের দিকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ থাকবে।’
তিনি বলেন, ‘ডিসেম্বর মাসের শেষের দিকে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা তেঁতুলিয়ায় ৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমেছিল। সেখানেও একই ধরনের অবস্থা বিরাজ করবে।’
এবার তীব্র শৈত্যপ্রবাহের সময় তাপমাত্রা ৪ দশমিক ৫ ডিগ্রির নিচে নামবে কিনা- জানতে চাইলে সামছুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘গত বছর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ডে ছিল ২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এখানে ঠিক সুনির্দিষ্টভাবে কত ডিগ্রি হবে, এ মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না। আরও সপ্তাহখানেক পরে বলা যাবে।’
আবহাওয়া বিভাগের পরিচালক আরও বলেন, ‘ডিসেম্বরে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে গিয়েছিল, ডিসেম্বরের শেষ দিকে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায়। তাপমাত্রা নেমে যাওয়ার পাশাপাশি সূযের আলো কম থাকায় শীতের তীব্রতা প্রচণ্ড ছিল। তাপমাত্রার মাপকাঠিকে হয়তো মৃদু শৈত্যপ্রবাহ ছিল ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি, কিন্তু সূর্যের আলো কম থাকায় এবং কোথাও কোথাও কনকনে হিমেল বাতাস থাকায় শীতের তীব্রতা সারাদেশেই প্রবলভাবে অনুভূত হয়।’
এদিকে, সারাদেশে শৈত্যপ্রবাহের কারণে শীতজনিত রোগব্যাধির প্রকোপ বেড়েছে। এখন পর্যন্ত ৪৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন্স সেন্টার অ্যান্ড কন্ট্রোল রুমের তথ্য অনুযায়ী, গত ১ নভেম্বর থেকে ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৫৪ দিনে (প্রায় দুই মাসে) সারাদেশের হাসপাতালে শীতজনিত বিভিন্ন রোগে মোট দুই লাখ ৫৮ হাজার ৬৫৭ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। একই সময়ে শীতজনিত বিভিন্ন রোগে ৪৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।