ইলেকট্রনিকস পাসপোর্টের (ই-পাসপোর্ট) যুগে প্রবেশ করল বাংলাদেশ। সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠ...
ইলেকট্রনিকস পাসপোর্টের (ই-পাসপোর্ট) যুগে প্রবেশ করল বাংলাদেশ। সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে ই-পাসপোর্ট গ্রহণের মাধ্যমে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) থেকে ঢাকায় বসবাসকারীও আবেদন করতে পারবেন এই ই-পাসপোর্টের জন্য। জুনে সারাদেশের পাসপোর্ট কার্যালয় থেকে ই-পাসপোর্ট দেয়া হবে। আর বছরের শেষ নাগাদ দেশের বাইরে ৮০টি মিশনে পৌঁছে যাবে ই-পাসপোর্ট।
বাংলাদেশ ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাকিল আহমেদ বলেন, ২৩ তারিখ (বৃহস্পতিবার) থেকে অনলাইনে ই-পাসপোর্টের আবেদন করা যাবে। এরপর অধিদফতরের আগারগাঁও, যাত্রাবাড়ী, উত্তরা, সচিবালয় ও ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের কার্যালয়ে গিয়ে আবেদনকারীরা বায়োমেট্রিক ও প্রয়োজনীয় তথ্য দেবেন।
ই-পাসপোর্টের আবেদন করবেন যেভাবে
ই-পাসপোর্টের আবেদন করতে হলে প্রথমে (www.epassport.gov.bd) এই ওয়েবসাইটে লগ ইন করতে হবে। ওয়েবসাইটে ঢুকে ডিরেক্টলি টু অনলাইন অ্যাপ্লিকেশনে (Directly to online application) ক্লিক করতে হবে।
প্রথম ধাপে বর্তমান ঠিকানার জেলা শহরের নাম ও থানার নাম নির্বাচন করে ক্লিক করতে হবে। পরের ধাপে ব্যক্তিগত তথ্য সম্বলিত ই-পাসপোর্টের মূল ফরমটি পূরণ করে সাবমিট করতে হবে। তৃতীয় ধাপে মেয়াদ ও পাসপোর্টের পৃষ্ঠা সংখ্যা অনুযায়ী ফি জমা দিতে হবে। এক্ষেত্রে যে কোনো ব্যাংকের ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড দিয়ে অনলাইনে পেমেন্ট করা যাবে।
এছাড়াও যদি অধিদফতরের অনুমোদিত পাঁচ ব্যাংকের যে কোনো একটিতে টাকা জমা দিয়ে সেই জমা স্লিপের নম্বর এখানে দিতে হবে। এরপর ফাইল সাবমিট করতে হবে। এর ফলে আপনার তথ্যগুলো পাসপোর্টের কার্যালয়ের সার্ভারে চলে যাবে। পরবর্তী ধাপে জাতীয় পরিচয়পত্রসহ (এনআইডি) প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস নিয়ে বায়োমেট্রিক তথ্য প্রদানের জন্য পাসপোর্ট অফিসে যেতে হবে।
শেষ ধাপে ই-পাসপোর্ট প্রস্তুতের পর আবেদনকারীকে জানানো হবে৷ আবেদনকারী নির্দিষ্ট সময়ে উপস্থিত হয়ে ই-পাসপোর্ট গ্রহণ করবেন।
মহাপরিচালক বলেন, জুনে সারাদেশের কার্যালয়ে এবং এই বছরের শেষ নাগাদ দেশের বাইরে ৮০টি মিশনে পৌঁছে যাবে ই-পাসপোর্ট।
কাগজের ফরম জমা
পাসপোর্ট অফিস থেকে ই-পাসপোর্টের কাগজের ফরম নিয়ে পূরণ করে জমা দিলেও মিলবে ই-পাসপোর্ট। কাগজের ফরমে আবেদনকারীর ৮৭ ধরনের তথ্য চাওয়া হবে। এমআরপি থেকে এই ফরম কিছুটা আলাদা। এই ফরমে পাসপোর্টের মেয়াদ (৫ বছর অথবা ১০ বছর) ও পাসপোর্টের পাতার সংখ্যা (৪৮ অথবা ৬৪) ইত্যাদি তথ্য জানতে চাওয়া হবে।
এছাড়াও দুদিনের মধ্যে অতি জরুরি পাসপোর্ট প্রয়োজন হলে আবেদনকারীকে নিজ উদ্যোগে আগেই পুলিশ ক্লিয়ারেন্স আনতে হবে। এক্ষেত্রে পাসপোর্টের ফরমে প্রি-পুলিশ ক্লিয়ারেন্স এর নম্বর ফরমে উল্লেখ করতে হবে। আবেদনের সময় জমা দিতে হবে ক্লিয়ারেন্সের কপি।
একজন প্রাপ্ত বয়স্কের ই-পাসপোর্ট করতে ফরম পূরণ করে জাতীয় পরিচয়পত্র/স্মার্ট কার্ড এবং ছবি জমা দিতে হবে।
এছাড়াও ১৮-এর কমবয়সীদের জন্য জন্মনিবন্ধন সার্টিফিকেট, বাবা-মায়ের ছবি ও জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি জমা দিতে হবে।
বাংলাদেশে আবেদনকারীদের জন্য ৪৮ পৃষ্ঠার পাঁচ বছর মেয়াদি সাধারণ ফি ৩৫০০ টাকা, জরুরি ফি ৫৫০০ টাকা ও অতীব জরুরি ফি ৭৫০০ টাকা এবং ১০ বছর মেয়াদি সাধারণ ফি ৫০০০ টাকা, জরুরি ফি ৭০০০ টাকা ও অতীব জরুরি ফি ৯০০০ টাকা।
এছাড়া বাংলাদেশে আবেদনকারীদের জন্য ৬৪ পৃষ্ঠার পাঁচ বছর মেয়াদি সাধারণ ফি ৫৫০০ টাকা, জরুরি ফি ৭৫০০ টাকা ও অতীব জরুরি ফি ১০৫০০ টাকা এবং ১০ বছর মেয়াদি সাধারণ ফি ৭০০০ টাকা, জরুরি ফি ৯০০০ টাকা ও অতীব জরুরি ফি ১২০০০ টাকা। সব ফির সঙ্গে যুক্ত হবে ১৫ শতাংশ ভ্যাট।