হস্তমৈথুন বা মাস্টারবেশন শব্দটির সঙ্গে আমরা সকলেই কম-বেশি পরিচিত। সেই আদিকাল থেকেই চূড়ান্ত গোপনীয়তায় মোড়া এই শারীরবৃত্তীয় কাজটি ...
হস্তমৈথুন বা মাস্টারবেশন শব্দটির সঙ্গে আমরা সকলেই কম-বেশি পরিচিত। সেই আদিকাল থেকেই চূড়ান্ত গোপনীয়তায় মোড়া এই শারীরবৃত্তীয় কাজটি নিয়ে মানুষের মনে রয়েছে নানান ধরনের কৌতূহল ও ভ্রান্ত ধারণা। যদিও চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের মতে, মাস্টারবেশন এমন একটি সাধারণ দৈহিক ক্রিয়া-কলাপ, যা নারী ও পুরুষ উভয়ের যৌনতৃপ্তিকে সন্তুষ্ট করতে সাহায্য করে। এটি কোনও রোগ বা অপরাধ নয়। তবে কোনও কাজ যেমন মাত্রাতিরিক্ত করা ভালো নয়, তেমনি এটিও অতিরিক্ত হওয়া ডেকে আনতে পারে শরীরের নানাবিধ সমস্যা।
মার্কিন একটি সমীক্ষা থেকে জানা গেছে, ১৬ থেকে ৪৪ বছর বয়সী মানুষের মধ্যে বিশ্বের প্রায় ৯৪ শতাংশ পুরুষ ও ৮৫ শতাংশ মহিলা নিয়মিত হস্তমৈথুনের অভ্যাসে আসক্ত হয়ে পড়েছেন। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এই অভ্যাস মানুষকে মূলত দুই ধরনের সমস্যায় ফেলতে পারে। প্রথমত, শারীরিক সমস্যা এবং দ্বিতীয়ত, মানসিক সমস্যা। যার ফলে এটি মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ও যৌনজীবনকে ভয়ঙ্করভাবে বিপর্যস্ত করে তুলতে পারে।
আজ থেকে কয়েকবছর আগে এই ধরণের যৌন সমস্যা নিজেদের বেডরুমের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতো। কিন্তু এখন আর তা হয় না। আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা, গবেষণা, যুগের উন্নতি এবং মানুষের চিন্তাধারার পরিবর্তনের ফলে যেকোনও ধরণের যৌন সমস্যা খোলামেলা বিষয়ে পরিণত হয়েছে। সুতরাং, আপনিও যদি অতিরিক্ত হস্তমৈথুনের অভ্যাসে আসক্ত হয়ে থাকেন, তাহলে এখনই এই অভ্যাসটি পরিত্যাগ করার চেষ্টা করুন। নইলে কিন্তু ঘোর বিপদ! যদি ভাবছেন কীভাবে পরিত্যাগ করবেন, তাহলে তার জন্য রইল কিছু সহজ টিপস।
১) নিজের কাছে প্রতিজ্ঞা করুন হস্তমৈথুন থেকে মুক্তি পেতে চাইলে আগে নিজের মনে স্থির করুন যে আপনি এই অভ্যাস ত্যাগ করবেন। একটা ছোট ছোট টার্গেট সেট করুন, ধরুন প্রথম টার্গেটে টানা দুইদিন হস্তমৈথুন করবেন না। যদি দেখেন দুইদিন না করে থাকতে পারছেন তবে ধীরে ধীরে এই সময়সীমা বাড়াবেন।
২) পর্নোগ্রাফি এড়িয়ে চলুন যদি মাত্রাতিরিক্ত হস্তমৈথুন থেকে সত্যি মুক্তি পেতে চান তাহলে এখুনি পর্ন মুভি দেখা বা চটি জাতীয় বই, এই সমস্ত কিছু থেকে দূরে থাকুন। এর পরিবর্তে কোনও ভালো সিনেমা দেখুন, বই পড়ুন, গেম খেলুন, বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা মারুন। তাহলে আপনি অনায়াসেই এই অভ্যাস থেকে মুক্তি পাবেন।
৩) সময় নির্ধারণ করে নিজের শখের বিষয়ে মন দিন সময় নির্ধারণ অর্থাৎ যেসময়ে আপনার মনে হস্তমৈথুন করার ইচ্ছে প্রকাশ পাচ্ছে, সেই সময়টা নির্ধারণ করুন এবং এই সময়ে আপনার ইচ্ছে বা শখের জিনিসের দিকে মন দিন। যেমন বই পড়া, কোনও বাদ্যযন্ত্র শেখা, ছবি আঁকা বা কোনও নতুন খেলাধূলার চেষ্টা ইত্যাদি।
৪) পরিবারের সঙ্গে বেশি সময় ব্যয় করুন যখনই কেউ একাকী বোধ করে তখন হস্তমৈথুনের অভ্যাসে জড়িয়ে পরে। সেক্ষেত্রে একা একা কম সময় ব্যয় করা হস্তমৈথুনের অভ্যাসকে হ্রাস করে। যেসময় বাড়িতে থাকবেন সেই সময় পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সময় কাটান। নিজেকে ঘরের ও সামাজিক কাজে নিযুক্ত রাখুন।
৫) ভালো বন্ধুদের সংস্পর্শে থাকুন বন্ধুদের এমন কিছু গ্রুপ রয়েছে যেখানে সাধারণত খুব গুরুত্বপূর্ণ ও ভালোকিছু নিয়ে আলোচনা হয়ে থাকে। সেই গ্রুপে নিজেকে অন্তর্ভুক্ত করুন। তাদের সঙ্গে নিজের সমস্যার কথা শেয়ার করুন এবং এটি দূর করার জন্য সাহায্য নিন।
৬) ব্যায়াম বা মেডিটেশন করুন হস্তমৈথুনের অভ্যাস থেকে মুক্তি পাওয়া এবং শরীরকে সুস্থ রাখার সবচেয়ে ভালো উপায় হল ব্যায়াম করা। তাই অবসর সময়ে দৌড়, সাঁতার কাটা ও বিভিন্ন ধরণের ধ্যান বা মেডিটেশন করুন।
এছাড়াও ১) এই সব অভ্যাসে না হলে চিকিৎসকের সাহায্য নিন। ২) বাথরুমে বেশি সময় থাকবেন না। ৩) রাতে হস্তমৈথুনের অভ্যাস থেকে থাকলে একা ঘুমোবেন না। পরিবারের কাউকে নিয়ে ঘুমোন। ৪) ফোন সেক্স এড়িয়ে চলুন। ৫) মেয়েদের দিকে কুনজরে তাকাবেন না। তাদের ব্যাপারে মন আর দৃষ্টি পবিত্র করুন।